রবিবার, ০৮ Jun ২০২৫, ০২:১৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ, ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টায় আমরা ক্ষমতা নেইনি, দায়িত্ব নিয়েছি: অর্থ উপদেষ্টা নওগাঁয় ভিজিডি কর্মসূচির কার্ড-ধারীদের কাছে থেকে টাকা নিয়ে চাল বিতরণ করার অভিযোগ কুরবানির হাটে অনিয়ম: ইজারাদারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ইউএসএস-এর উদ্যোগে লালমনিরহাটে বৃক্ষরোপণ টানা বৃষ্টিপাতে থানচিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা ডিমলায় পশুর হাটে চলছে ইচ্ছে মতো খাজনা আদায়, ৫০০ টাকার খাজনায় ভ্যাট ৫০০ সারা দেশে একযোগে ২৫২ বিচারককে বদলি সিরাজগঞ্জের গাবগাছি হিন্দু পাড়ার রাস্তাটি যেন মরণ ফাঁদ শরণখোলা উপজেলার ৪ নং সাউথখালী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটির গঠনে অনিয়ম নিয়ে সংবাদ সম্মেলন
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ১৫ সেরা দল তবে ফর্মহীন

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ১৫ সেরা দল তবে ফর্মহীন

ক্রীড়া ডেস্কঃ ফর্মে থাকা এক দল ক্রিকেটার যে বিশ্বমঞ্চে শতদলে উদ্ভাসিত হতে পারেন, সেটি হাবিবুল বাশারের চেয়ে ভালো কে জানেন!

২০০৭ বিশ্বকাপের ওই দলটির অধিনায়ক ছিলেন। আগের বছরে তাঁর নেতৃত্বে ২৮ ওয়ানডের মধ্যে ১৮টি জেতে বাংলাদেশ। এই ফরম্যাটে ওই বছর হাজারের ওপর রান শাহরিয়ার নাফীসের; রানের মধ্যে ছিলেন আফতাব আহমেদ, মোহাম্মদ আশরাফুল, সাকিব আল হাসান এবং অধিনায়ক স্বয়ং। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো পরাশক্তিদের হারানোয় সেটি কী প্রভাবকের ভূমিকাই না রেখেছিল!

এক যুগ পর আরেক বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণায় অন্যতম নির্বাচক তিনি। তবে এবার ফর্মে থাকার ফুরফুরে মেজাজে নেই হাবিবুল। বরং ব্যাটসম্যানদের ফর্মহীনতা ভাবিয়ে তুলেছে সাবেক এ ব্যাটসম্যানকে। তবু স্কোয়াড নির্বাচনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে পরীক্ষিতদের ওপর রেখেছেন আস্থা। সে আস্থার প্রতিদান এবার ব্যাটসম্যানরা দিলেই হয়!

‘ব্যাটসম্যানদের ফর্মে না থাকাটা আমাদের জন্য অবশ্যই উদ্বেগের। সে কারণেই বিশ্বকাপ স্কোয়াড দিতে এত দেরি। নইলে নিউজিল্যান্ডেরও আগে প্রথম দেশ হিসেবে স্কোয়াড দিয়ে দিতে পারতাম’—কাল দল ঘোষণার পর বলছিলেন হাবিবুল। ১৫ সদস্যের দলে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষিতদের ওর আস্থার কারণটাও জানান তিনি, ‘নান্নু ভাই ও আমাকে এ নিয়ে অনেক ভাবতে হয়েছে। অনেক আলোচনা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আমরা আস্থা রেখেছি পরীক্ষিতদের ওপর। বিশ্বকাপ মাথায় রেখে এ দলটিকে আমরা তৈরি করেছি দুই বছর ধরে। সেখানে নিউজিল্যান্ড সিরিজ ও প্রিমিয়ার লিগের পারফরম্যান্স দেখে কিভাবে কাউকে বাদ দিই!’

বাদ হয়তো দেওয়ার উপায় ছিল না। তবে ব্যাটসম্যানদের ফর্মে উদ্বেগের হাজারো উপাদান। বিশ্বকাপ স্কোয়াডের ১৫ জনের মধ্যে ৯ জনকে ধরা যায় ব্যাটসম্যান হিসেবে। তাঁদের মধ্যে সাকিব আল হাসান বিপিএল ফাইনালের ইনজুরির কারণে যেতে পারেননি নিউজিল্যান্ড। এরপর আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে মাত্র একটি ম্যাচই খেলেছেন, যেখানে আবার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদ উল্লাহ খেলেননি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হাসেনি কারো ব্যাট। কিউইদের বিপক্ষে তিন ওয়ানডেতে তামিমের রান ৫, ৫ ও ০; মুশফিকের ৫, ২৪ ও ১৭; মাহমুদের ১৩, ৭ ও ১৬। অভিজ্ঞ এ চতুষ্টয়ের বাইরে খেলার মধ্যে রয়েছেন যাঁরা, তাঁদের বেশির ভাগের অবস্থাও তথৈবচ। সৌম্য সরকার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ওয়ানডেতে করেছিলেন ৩০, ২২ ও ০। এরপর প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়েও হাসেনি ব্যাট। ৯ ম্যাচের মধ্যে ফিফটি নেই কোনো। লিটন দাশের অবস্থা খানিকটা ভালো। মোহামেডানের হয়ে পাঁচ ম্যাচের স্কোর ২৭, ৮৪, ৩৬, ৫৩ ও ২৪। যদিও কিউইদের বিপক্ষে তিন ওয়ানডেতে ১, ১ ও ১ রানে আউট হওয়ার দুঃসহ ফর্ম পিছু ফেলার জন্য সেটি যথেষ্ট কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন যথেষ্ট। মোহাম্মদ মিঠুন ওই সিরিজের দুটি ম্যাচেই ফিফটি করেন। তবে প্রিমিয়ার লিগে ছয় ম্যাচ খেলেও এখনো ফিফটির দেখা পান না। সাব্বির রহমান সেঞ্চুরি করেছিলেন কিউইদের বিপক্ষে। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগের ১০ ম্যাচের মধ্যে যখন সর্বোচ্চ ইনিংসটি ৬১ রানের—প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে তাঁর ফর্মও।

ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ফর্ম নিয়ে শুধু বিশ্বকাপে যাচ্ছেন মোসাদ্দেক হোসেন। প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়ে ১২ ম্যাচে ৪২৮ রান করেছেন ৪৭.৫৫ গড়ে। একটি সেঞ্চুরির সঙ্গে চারটি হাফসেঞ্চুরিও আসে তাঁর ব্যাট থেকে। বাংলাদেশের হয়ে ২৪ ওয়ানডের শেষটি খেলেছিলেন গত বছর এশিয়া কাপে, ভারতের বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচে। বিশ্বকাপ স্কোয়াডের ৯ ব্যাটসম্যানের মধ্যে ফর্মে রয়েছেন শুধু এই মোসাদ্দেকই।

নির্বাচকদের তাই কপালে ভাঁজ। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অতীতের পারফরম্যান্স বিবেচনায় এই ব্যাটসম্যানদের উপেক্ষা করতে পারেননি বলে জানালেন হাবিবুল, ‘আমাদের সব ব্যাটসম্যান পরীক্ষিত। নিউজিল্যান্ড সিরিজ ও প্রিমিয়ার লিগ বাদ দিয়ে গত বছর দুয়েকের হিসাব নিলে দেখবেন, ওরা অনেক অনেক রান করেছে। এমন ব্যাটসম্যানদের ফর্মে ফেরার জন্য খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন পড়ে না। আমরা খুব ভাগ্যবান যে ত্রিদেশীয় সিরিজে অন্তত চারটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাব। সেখানে এই ব্যাটসম্যানরা ফর্মে ফিরবে বলে আমাদের আশা।’

আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগের বিশ্বকাপ স্কোয়াডের অন্তত ১৩ জনের নাম নিশ্চিত বলে ঘোষণা করেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। প্রিমিয়ার লিগের ফর্ম এখানে খুব বিবেচ্য হবে না বলেও জানিয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। লিগে ব্যাটসম্যানদের রানখরার সঙ্গে এসব মিলিয়ে অনুপ্রেরণার অভাবকে দায় দেন অনেকে। নির্বাচক হাবিবুল অবশ্য অমন কিছু ভাবছেন না, ‘অনুপ্রেরণার অভাব রয়েছে বলে আমি মনে করি না। যদি হয়, তাহলে সেটি হবে দুঃখজনক। একজন খেলোয়াড়ের জন্য সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় পারফরম করা। আমি এ বয়সেও যখন উইকএন্ড ক্রিকেট খেলতে যাই, শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়েও রান করার চেষ্টা করি। একজন ব্যাটসম্যান যখন রান করে না, তখন রাতের ঘুম ভালো হয় না। সে কারণেই আমার মনে হয় না, বিশ্বকাপ দলে জায়গা নিশ্চিত জেনে কেউ প্রিমিয়ার লিগকে হালকাভাবে নিয়েছে। আর সত্যি বলতে কী, সে জায়গাটি নিশ্চিতও ছিল না। তাহলে তো আমরা আরো আগেই দল দিয়ে দিতে পারতাম।’

তা দেননি। অপেক্ষা করেছেন। আরো অপেক্ষা। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা আর ফর্মে ফেরেননি। তবু তাঁদের পিঠে আস্থার হাত রেখে মিনহাজুল-হাবিবুলের নির্বাচক কমিটির প্রত্যাশা—ফর্মহীন ব্যাটসম্যানদের মেঘদলে নিশ্চয়ই অনেক বৃষ্টি (পড়ুন) নিশ্চয়ই জমে আছে। সে রানবৃষ্টি ঝরলেই না বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা মেলবে পাখা!

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com